মোবাইল তৈরিতে কত টাকা খরচ হয় ? মোবাইলের আসল দাম জানলে অবাক হবেন ! How to Build Cost in Mobile ???
মোবাইল তৈরিতে কত টাকা খরচ হয় ?
এরকম হয় কেন? সত্যিকার অর্থে স্মার্টফোনের প্রকৃত দাম আসলে
কত? আমাদের কাছে কত টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে?
প্রথমে এটা জেনা নেওয়া যাক একটি স্মার্টফোন কোম্পানির সম্পূর্ন
একটি স্মার্টফোন তৈরিতে কত টাকা খরচ হয়? একটি স্মার্টফোন তৈরি করার জন্য স্মার্টফোন
কোম্পানির বিভিন্ন সেক্টরে খরচ হয়ে থাকে।সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।
১।
ক্যামেরা
মোবাইলফোনে যে
ক্যামেরা থাকে সে ক্যামেরার সেন্সর তৈরি করে থাকে অন্য কোন প্রতিষ্ঠান। বেশিরভাগ ক্যামেরার
সেন্সর তৈরি করে থাকে “সনি” এবং “স্যামসাং” কোম্পানি। মার্কেটে যত স্মার্টফোন
ব্রান্ড রয়েছে তারা তাদের ক্যামেরা ব্যবহার করার জন্য “সনি” এবং “স্যামসাং” কোম্পানির
কাছ থেকে ক্যামেরার সেন্সর কিনে তাদের স্মার্টফোনে ব্যবহার করে।
২। ডিসপ্লে
মোবাইলফোনে যে ডিসপ্লে থাকে সেটি ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন
কোম্পানির কাছ থেকে কিনে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের স্ক্রিন বিক্রি করে থাকে
“স্যামসাং” কোম্পানি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে xiomi,Realme,Oppo যে কোন কোন কোম্পানি “স্যামসাং”
এর কাছ থেকে ডিসপ্লে কিনে ব্যবহার করে থাকে।
৩। গ্লাস
মোবাইলফোনে সে
গ্লাস ব্যবহার করে থাকে সেটা তৈরি করে থাকে “Corning Gorila Glass” নামক কোম্পানি।
যেমন আপনি শুনে থাকবেন যে স্মার্টফোনে “Corning Gorila Glass 3,4,5,6”এর প্রোটেকশন।
এ গুলো বিক্রি করে থাকে “Corning Gorila Glass” । তাই এই সেক্টরে খরচ হয়ে থাকে।
৪। র্যাম
মোবাইলফোনে যে গ্লাস ব্যবহার করে থাকে সেটা তৈরি করে থাকে
“স্যামসাং” ইলেক্ট্রি। তাই “স্যামসাং” এর কাছ থেকে র্যাম কিনতে হয় বিভিন্ন মোবাইল
কোম্পানিকে।
৫। প্রসেসর
মোবাইলফোনে যে প্রসেসর
থাকে সেগুলো বিক্রি করে থাকে বিভিন্ন প্রসেসর তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান। যেমন স্যামসাং এর
রয়েছে “Exynas” প্রসেসর, হুয়াইয়ের রয়েছে “Kirin” এর প্রসেসর, মিডিয়াটেক এর রয়েছে
“Helio” সিরিজের প্রসেসর, Qualcomm এর রয়েছে “Snapdragon”
প্রসেসর। এসব কোম্পানির কাছ থেকে প্রসেসর কিনে স্মার্টফোনে
ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৬। ব্যাটারী
মোবাইলফোনে যে ব্যটারী ব্যবহার করা হয় সেটিও বিভিন্ন কোম্পানির
কাছ থেকে কিনে আনা হয়।
৭। কর্মচারী
এসমস্ত যাবতীয় এক্সসিরিজ কিনার পরে স্মাটফোনটি ফ্যাক্টরিতে
অ্যাসেম্বল করার জন্য যে কর্মচারী রাখা হয় তাদের পিছনে টাকা খরচ হয়। সমস্ত কিছু হওয়ার
পরে ফোনটি সম্পূর্নভাবে তৈরি করা হয়।
৮। প্রমোশন ব্যায়
স্মার্টফোনটি প্রমোশন করার জন্য বিজ্ঞাপন করতে হয়। স্মার্টফোনটি
বিজ্ঞাপন করার জন্য বিভিন্ন তারকাদের পিছনে টাকা খরচ করতে হয়। এটাকে বলে প্রমোশন ব্যায়।
৯। উদ্ভাবন ব্যয়
একটা স্মার্টফোন যখন মার্কেটে আনা হয় তখন স্মার্টফোনটিতে
নতুন কি কি ধরনের ফিচার যোগ করা যায়? সে স্মার্টফোনটির ডিজাইন কেমন হবে? দেখতে কতটা
উন্নত হবে। এটাকে বলা হলো উদ্ভাবন ব্যয়। সেই সমস্ত উদ্ভাবন এর জন্য মোবাইল কোম্পানি আলাদা
ভাবে রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট টিম মেম্বারদের উপর আলাদা ভাবে টাকা বিনিয়োগ করে থাকে।
তাদের প্রতি যত বেশি টাকা বিনিয়োগ করে থাকে তারা তত বেশি রিসার্চ করে উন্নত ও নতুন
ফিচার মোবাইলে যোগ করে।
উপরের সবমিলিয়ে নির্ধারন করা হয় একটি স্মার্টফোনের দাম
কত হবে। এর পর সে স্মার্টফোনটি মার্কেটে রিলিজ করা হয় একটা নির্দিষ্ট দামে। কিন্তু
এখানে একটা বিষয় থাকে মার্কেটে প্রথমবার রিলিজে দাম বেশি থাকে। কিন্তু ধীরে ধীরে সে
স্মার্টফোনটির দাম কমে যায়। এটা কেন হয়? এটা হওয়ার কারন হল একটি স্মার্টফোন তৈরী করার
জন্য যে উদ্ভাবন ব্যয় হয় সে খরচটা তারা প্রথম রিলিজে উঠিয়ে নেয় দাম বেশি রেখে। তার
পরবর্তীতে তাদের একটি টার্গেট থাকে যে আমরা ১০০০ পিস বা নির্দিষ্ট একটি টার্গেট রাখে
যে এত পিস স্মার্টফোন বিক্রি করলে সে উদ্ভাবন ব্যয়টা উঠে যাবে। যখন তাদের উদ্ভাবন ব্যয়টা
উঠে যায় তখন স্মার্টফোনের দামটা কমিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদের বিক্রি বাড়তে থাকে।
এখন একটি প্রশ্ন থাকতে পারে ফোন কোম্পানি কি কোনভাবে ঠকিয়ে
দাম বেশি রাখছে? এর উ্ত্তর হচ্ছে কোনভাবেই সম্ভব না। কারন বর্তমানে মার্কেটে রয়েছে
একাধিক মোবাইল ব্রান্ড প্রতিটি কোম্পানি চাই কম দামে বেশি কিছু দিযে তাদের বিক্রি বাড়াতে।
কোন কোম্পানি এটা চাইবে না বেশি দাম রেখে তাদের বিক্রি কমিয়ে দেওয়ার জন্য।
ধন্যবাদ
No comments