মোবাইল ফোন কেন গরম হয়? কোন বডির ফোন বেশি ভালো? ফোনে ব্যাক কভার ব্যবহার করা উচিৎ কিনা
মোবাইল ফোন গরম হওয়ার আসল কারন কি? কোন বডির ফোন বেশি ভালো?
প্লাস্টিক,কাঁচ এবং মেটাল যেকোন স্মার্টফোন ডিজাইন করার জন্য এ তিন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে
থাকে। কোন স্মার্টফোনের বডি থাকে প্লাস্টিকের, কোন স্মার্টফোনের বডি থাকে মেটালের এবং
কোনটির বডি কাঁচের। তবে এই তিন ধরনের প্রযুক্তির মধ্যে কোনটি সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক
এবং সবচেয়ে বেশি ভালো এ বিষয়টি জানা অত্যন্ত জরুরী এবং গুরুত্বপুর্ন। কারন হচ্ছে একটি
ম্মার্টফোনের ডিজাইন কতটা স্টাইলিস এবং শক্তপোক্ত হবে সেটা সম্পূর্নভাবে নির্ভর তিনটি
(মেটাল,গ্লাস,প্লাস্টিক) পদার্থের উপর।
১। মেটাল বডি(Metal Body)
সুবিধা:
i) মেটাল
বডি স্মার্টফোনগুলো অনেক শক্তপোক্ত হয়ে থাকে পাশাপাশি পড়ে গেলে চট করে ভেঙ্গে যাওয়ার
ভয় থাকে না।
ii) মেটালের
ফোন অনেক মজবুত হয় এবং ফোন নিয়ে অনেক নিশ্চিত থাকা যায়।
iii) মেটালের
উপর স্ক্রাচ বা দাগ পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না।
iv) মেটাল
জিনিসটা হিটটাকে কন্ট্রোল করতে পারে মানে অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে ফোনটি যখন গরম
হয়ে যায় মেটাল খুব সহজে হিটটাকে বের করে দিতে পারে আসলে মেটাল হচ্ছে তাপ পরিবাহি।তাই
মেটাল বডির ফোনগুলোতে হিটিং ইস্যু থাকে না।
অসুবিধা:
i) মেটাল
পড়ে গেলে ভাঙ্গে না ঠিক কিন্তু ক্রমাগত সেটা ঘসা লেগে রঙ উঠতে থাকে এবং ধীরে ধীরে ডিজাইন
নষ্ট হয়ে যায়।
ii) মেটালের আরেকটি বড় সমস্যা হল মেটাল বডির স্মার্টফোনগুলোতে নেটওয়ার্ক ক্রিশক্রিপশনের সমস্যা থাকে মানে মেটাল বডির ফোনে নেটওয়ার্ক ক্রিশক্রিপশনে বাঁধা দেয়।যে কারনে মেটাল বডি ফোনগুলোতে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ধারন করতে পারে না।একারনে ইউনিবডি মেটালের ফোন বর্তমান সময়ে কম দেখা যায়।মোবাইল কোম্পানিগুলো ইউনিবডি মেটাল জিনিসটাকে ধীরে ধীরে পরিহার করছে।
২।পলিকার্বোনিক ডিজাইন বা প্লাস্টিক বডি(Plastic
Body)
ii) মেটালের আরেকটি বড় সমস্যা হল মেটাল বডির স্মার্টফোনগুলোতে নেটওয়ার্ক ক্রিশক্রিপশনের সমস্যা থাকে মানে মেটাল বডির ফোনে নেটওয়ার্ক ক্রিশক্রিপশনে বাঁধা দেয়।যে কারনে মেটাল বডি ফোনগুলোতে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ধারন করতে পারে না।একারনে ইউনিবডি মেটালের ফোন বর্তমান সময়ে কম দেখা যায়।মোবাইল কোম্পানিগুলো ইউনিবডি মেটাল জিনিসটাকে ধীরে ধীরে পরিহার করছে।
iii) মেটালের
সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে এত অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও মেটালের দাম বেশি পড়ে যায়।তুলনামুলক
দাম বেশি এবং ফোনটা বেশি ভারী হয়ে যায় এসব কারনে মেটাল বডি ব্যবাহার করা বন্ধ করে দিয়েছে
প্রায় প্রতিটা কোম্পানি।
সুবিধা:
i) প্লাস্টিক জিনিসটার সবচেয়ে ভালো দিক হলো প্লাস্টিক বডির ফোনগুলো তুলনামুলকভাবে মেটাল বডি ও কাঁচ বডির ফোনগুলো থেকে অনেক ভালো নেটওয়ার্ক প্রদান করে মানে হচ্ছে প্লাস্টিক বডির ফোনগুলোতে নেটওয়ার্ক ক্রিশক্রিপশনে কোন বাঁধা সৃষ্টি হয় না। যে কারনে নেটওয়ার্কটা অনেক শক্তিশালী থাকে।এছাড়াও ফোনটা অনেক হালকা ও স্টাইলিস করা যায়।
ii) প্লাস্টিক
বডির ফোনকে যেরকম ইচ্ছা ডিজাইন করা যায় এবং প্রিমিয়াম ভাবে তৈরি করা যায়।
iii) প্লাস্টিক
পড়ে গেলে চট করে ভেঙ্গে যায় না এবং মেটালের মত ডেন্ট আসে না বা রঙ ওঠে না।
iv) প্লাস্টিকের
মুল্য অনেক কম তাই সকল মোবাইল কোম্পানিগুলো এর ফিছনে বেশি ছুটছে।
v) প্লাস্টিকের উপর যেকোন ধরনের ডিজাইন বা গ্রাফিক্স দিতে খরচ কম হয়।খুব সহজে প্লস্টিকের উপর গেডিয়েন ফিনিস দেওয়া যায়।গেডিয়েন জিনিসটা ফোনটাকে অনেক প্রিমিয়াম দেখায়।
v) প্লাস্টিকের উপর যেকোন ধরনের ডিজাইন বা গ্রাফিক্স দিতে খরচ কম হয়।খুব সহজে প্লস্টিকের উপর গেডিয়েন ফিনিস দেওয়া যায়।গেডিয়েন জিনিসটা ফোনটাকে অনেক প্রিমিয়াম দেখায়।
অসুবিধা:
i) প্লাস্টিক
বডিতে গেডিয়ান ফিনিস দেওয়ার ফলে অনেক প্রিমিয়াম লাগে কিন্তু প্লাস্টিক বডি হওয়ার ফলে
ঐ স্মার্টফোনটির পিছনে খুব সহজে এবং অল্প আঁচড়ে পিছনে স্ক্রাচ বা দাগ পড়ে যেতে পারে।এটা
প্লাস্টিকের সবচেয়ে বড় সমস্যা।
ii) প্লাস্টিকের
ফোন খুব সহজে গরম হয়ে যায়।কারন প্লাস্টিক তাপের কুপরিবাহী।যে কারনে ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার
করলে বা বেশি গেমিং করলে তখন প্রসেসরে অতিরিক্ত তাপ জেনারেটর হয়।তখন প্লাস্টিক সে তাপটাকে
সহজে বের করে দিতে পারে না। যে কারনে প্লাস্টিক বডির ফোনগুলোতে হিটিং ইস্যু দেখা যায়।
৩। কাঁচ বডি (Glass Body)
কাঁচ হচ্ছে প্রিমিয়াম জিনিস অধিকাংশ দামী স্মার্টফোনে কাঁচ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদিও বর্তমান
সময়ে এর ব্যতিক্রমও দেখা যায়। কাঁচ বডির ফোনগুলোতে যে কাঁচ ব্যবহার করে থাকে সেগুলো
তৈরি করে থাকে Corning Gorila Glass নামক কোম্পানি। কিছু স্মার্টফোনে ব্যবহার করা থাকে
Corning Gorila Glass 3,5,6 ইত্যাদির প্রোটেকশন।
সুবিধা:
i) কাঁচ বডির ফোনগুলোতে কোন রকম দাগ বা স্ক্রাচ পড়ার ভয় থাকেনা। এ ফোনগুলো দেখতে অনেক প্রিমিয়াম
বা সুন্দর দেখায়।
ii) রঙ উঠে
যাবার কোন ভয় থাকে না কারন কাঁচ এর ভিতরে থাকে ফোনটির রঙ ও ডিজাইন।
iii) কাঁচের ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক ক্রিশক্রিপশনের সমস্যা হয় না।
iv) কাঁচ কিছুটা তাপ পরিবাহী তাই প্লাস্টিকের চেয়ে কাঁচ যুক্ত ফোনে হিটিং ইস্যিু কম হয়।
অসুবিধা:
i) কাঁচের সবথেকে বড় অসুবিধা হলো কাঁচ বডির ফোনগুলোতে যত বড় Corning Gorila Glass এর প্রোটেকশন
থাকুক না কেন হাত থেকে পড়ে গেলে ভেঙ্গে যাবার ভয় থাকে।
ii) কাঁচে যদি বালুর দানার ঘসা লাগে তাহলে সহজে স্ক্রাচ বা দাগ পড়ে যায় এবং প্রিমিয়াম লুকটা নষ্ট
হয়ে যায়।
iii) দাম অনেক বেশি পড়ে যায়। কারন কোম্পানিকে Corning Gorila Glass এর জন্য আলদা ইনভেস্ট করতে হয়।তাছাড়া ভাঙ্গা কাঁচ পরিবর্তন করতে হলে অনেক খরচ হয়ে থাকে।
iii) দাম অনেক বেশি পড়ে যায়। কারন কোম্পানিকে Corning Gorila Glass এর জন্য আলদা ইনভেস্ট করতে হয়।তাছাড়া ভাঙ্গা কাঁচ পরিবর্তন করতে হলে অনেক খরচ হয়ে থাকে।
এত গেল তিন ধরনের জিনিসের সুবিধা ও অসুবিধা।এখানে
একটি বড় প্রশ্ন হল ব্যাক সাইড যে ধরনের হোক না কেন স্মার্টফোনগুলোতে ব্যাক কভার ব্যবহার
করা ঠিক হবে কি না? মেটাল ও কাঁচ বডির ফোনগুলোতে ব্যাক কভার ব্যবহার না করলেও হয়।কিন্তু
প্লাস্টিক বডির ফোনগুলোতে ব্যাক কভার ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন। কারন প্লাস্টিক
বডির ফোনগুলো খুব সহজে স্ক্রাচ পড়ে যায় এবং ডিজাইন নষ্ট হয়ে যায়।সে কারনে ডিজাইনটাকে
রক্ষা করার জন্য ব্যাক কভার ব্যবহার করতে হয়।অন্য দিকে ব্যাক কভার ব্যবহার করলে সবথেকে
ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে স্মার্টফোনের উপর।ব্যাক কভার ব্যবহার করলে স্মার্টফোনটি যখন গরম
হয় বা হিট হয় সে হিটটাকে বের করে দিতে পারেনা ব্যাক কভারের জন্য। যে কারনে ব্যাক কভার
ব্যবহার করলে সে ধরনের ব্যাক কভার ব্যবহার করবেন যে ব্যাক কভারগুলো খুব সহজে হিটগুলো
বের করে দিতে পারে অথবা পিছনে স্টিকার ব্যবহার করতে পারেন যেটা ফোনের পিছনে দাগ পড়া
থেকে রক্ষা করবে।অন্যদিকে মোটা ও ভারী ব্যাক কভার ফোনের হিটটাকে বের করে দিতে পারে
না।য়ার ফলে স্মার্টফোনটি খুব দ্রুত হিটিং হয়,হ্যাং করে,ল্যাক করে ও স্লো হয়ে যায় এবং
ফোনটির আয়ু কমে যায়।
পোষ্টটি ভালো লাগলে এবং আপনার উপকারে আসলে দয়া করে কমেন্ট ও বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন।
ধন্যবাদ
ধন্যবাদ
ReplyDeleteসুন্দর লেখনী। ধন্যবাদ।
ReplyDeleteসুন্দর পোস্ট
ReplyDelete